শ্রীল প্রভুপাদ বাল্যলীলা
প্রভুপাদ প্রনাম মন্ত্র
বিনম্র প্রনাম মোর সেই ভক্ত পদে,
অহৈতুকি ভক্তি যার সদা বিষ্ণুপদে । ১ ।
ভুতলে কৃষ্ণের অতি প্রিয় যেই জন,
ভক্তিবেদান্ত স্বামী নাম মহাজন । ২ ।
নমস্কার তব পদে সরস্বতীর শিষ্য,
গৌরাঙ্গের বাণী প্রচার কৈলে সারা বিশ্ব । ৩
।
পাশ্চাত্যের দেশ যত করিলে উদ্ধার,
নির্বিশেষ আর শূন্যবাদের করিলে ছারখার । ৪ ।
ভক্ত গুণ শ্রবণের গুরুত্ব
নববিধা ভক্তি মধ্যে শ্রবণ-কীর্তন,
যাহার মহিমা শাস্ত্রে হইয়াছে নিরূপণ ।৫।
হরি গুণ-লীলা শ্রবন সত্য করি মানি,
তাহা হইতে অধিক যবে ভক্ত গুণ শুনি । (শ্রী.ভা. ৩.১৩.৪) ।৬।
সেনাপতি ভক্ত
অনন্ত গৌরাঙ্গচন্দ্রের অনন্ত ভক্তগণ,
তাঁদের অনন্তলীলার না যায় গণন । ৭।
হেন ভক্ত মধ্যে এক ভকত মহান,
সেনাপতি আখ্যা দিলেন গৌর ভগবান । ৮।
আজি করিবারে সাহস তাঁর গুণাস্বাদ,
জগতে বিদিত নামে শ্রীল প্রভুপাদ ।৯।
মহাপ্রভুর ভবিষ্য-বাণী সার্থক
মহাপ্রভু বলেছিলেন সারা পৃথিবীতে,
প্রচার হইবে মোরনাম নগর ও গ্রামেতে । ১০।
তার সহজ অর্থ কেহ নারিল বুঝিতে,
মুখ্যার্থ ছাড়িয়া কল্পে গৌণার্থ তাহাতে । ১১।
সেনাপতি ভক্তের তবে হইল আগমন,
গৌরবাণী সত্য করি করিলা স্থাপন । ১২।
ভক্তগণ কৃপাকণা করিয়া প্রার্থনা,
প্রভুপাদ বাল্যলীলার সামান্য বর্ণনা । ১৩।
আবির্ভাব
আঠারশ ছিয়ানব্বই শহর কলিকাতা,
নন্দোৎসব পুণ্যতিথি অবতীর্ণ তথা । ১৪।
পিতা গৌরমোহন দে আর রজনীদেবী মাতা,
হেন ঘরে অবতীর্ণ হইলা জগত ত্রাতা । ১৫।
গৌরমোহন বৈষ্ণব বড়, মনে ইচ্ছা
শক্ত,
পুত্র মোর হইবেক রাধারাণীর ভক্ত । ১৬।
নামকরন কৈলা তাঁহার অভয়-চরণ দে,
গৌরবাণী প্রচার করি জগত উদ্ধারিবে । ১৭।
কোষ্ঠীর বিচার
জ্যোতিষী আইলা এক কোষ্ঠীর বিচারে,
অদ্ভুত সব লক্ষণ দেখি মনে চমৎকারে । ১৮।
হেন পুত্র হইবে এক সন্যাসী অদ্ভুত,
সত্তর বৎসর বয়সেতে যাইবে পাশ্চাত্য । ১৯।
ধর্মপ্রচার লাগি করিবে সিন্ধু আতিক্রম,
একশত-আট কৃষ্ণমন্দির
করিবে স্থাপন । ২০।
কোষ্ঠী শুনি পিতা মাতার আনন্দ হৃদয়,
কৃষ্ণচন্দ্র আমা প্রতি হইলা সদয় । ২১।
অন্নপ্রাশন
অন্নপ্রাশন সময় আইল গৌরমোহন ঘর,
আনন্দ হৃদয় সবার উৎসবে মুখর । ২২ ।
এক
পাশে ভাগবত আর পাশে ধন,
ভোজ্যদ্রব্য রাখে শিশু লইবে যাহা মন । ২৩।
কেহ বলে বণিক পিতার পুত্র লইবে ধন,
কেহ বলে দেখ ভাগবতে নিরীক্ষণ । ২৪ ।
ভাগবত পানে অভয় আনায়াসে ধায়,
দেখিয়া পিতার হ্রদয় আনন্দেতে ভায় । ২৫ ।
টাইফয়েড জ্বর
দেড় বছর বয়স তখন টাইফয়েড জ্বর,
অভয়ে ধরিল আসি ব্যাধি ভয়ঙ্কর । ২৬ ।
গৌরমোহন বোলাইলা কার্তিক বোস বৈদ্য,
পরীক্ষা করিয়া কহে নাহি কোন পথ্য । ২৭ ।
মাংসের ঝোল আনি দেহ নাহি অন্য পথ,
গৌরমোহন দৃঢ় কহে অসম্ভব এই মত । ২৮ ।
মোর ঘরে নাহি কভু আমিষের গন্ধ,
কিমতে হইবে এথা হেন কার্য্য মন্দ ।২৯ ।
বৈদ্য বলে আনিব আমি হইতে অন্য কতি,
পুত্রের প্রাণ রাখিবারে দেহ অনুমতি । ৩০ ।
তবে বৈদ্য পাত্র ভরি আমিষ-ঝোল আনি,
শিশু মুখে ঢালে শিশু ফেলিল তখনি । ৩১ ।
গৌরমোহন পুত্র করে কৃষ্ণে সমর্পণ,
কৃষ্ণ কৃপায় অনায়াসে ব্যাধির উপশম । ৩২ ।
প্রত্যহ রাধাগোবিন্দ দর্শন
হ্যারিসন রোডে হয় মল্লিকদের বাস,
তারই এক ধারে গৌরমোহনের আবাস । ৩৩ ।
মল্লিকদের মালিকানায় রাস্তার অপর ধারে,
রাধাগোবিন্দ বিরাজ করেন সুরম্য মন্দিরে । ৩৪।
পিতা-মাতা-ভৃত্য সনে প্রত্যহ সকালে,
ঠাকুর দরশনে অভয় চলে কুতুহলে । ৩৫ ।
রাধাগোবিন্দ রূপমাধুরী অপূর্ব-অনুপম,
দর্শন দিয়া অভয়ের নিত্য হরে মন । ৩৬।
রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ
একদিন পিতা ছোট্ট রাধাকৃষ্ণ মূর্তি আনি,
পুত্রে দিলা পুজিবারে শিখাইলা আপনি । ৩৭।
কনিষ্ঠ ভগিনি সাথে বিগ্রহ সেবন,
তাঁরে অর্পণ বিনা কিছু না করে গ্রহণ । ৩৮।
কখনও শৃঙ্গার করে, গায়েন ভজন,
ঘৃতদ্বীপ অর্পণ করি করান শয়ন । ৩৯।
সেই হতে কৃষ্ণ সেবায় অভয়ের নিষ্ঠা,
ভাবীকালে বিশ্বজুড়ে করিবে যার প্রতিষ্ঠা ।
৪০।
রথযাত্রা
আরেকদিন অভয়ের ইচ্ছা হইল মনে,
রথযাত্রা করিবেক সকল মিত্র সনে । ৪১।
পুরোনো এক রথ তাহার এক গজ উচ্চতা,
পুত্র বাঞ্চা পূর্তি হেতু আনি দিলেন পিতা । ৪২।
পিতা পুত্র মিলিয়া রথ করিলেন সংস্কার,
সাজাইলেন অপূর্ব দেখি লাগে চমৎকার ।৪৩।
স্ত্রীগণ লইয়া সব মাতা রজনী-দেবী,
রন্ধন করিলেন যত প্রসাদ সামগ্রী । ৪৪ ।
বালকের উৎসাহ দেখি পারাপড়শীগণ,
সকলের উদযোগে হইল মহা-আয়োজন । ৪৫।
মৃদঙ্গ,
করতাল আর কীর্তনের ধ্বনি,
অগ্রে
চলে ছোট্ট অভয় বালকশিরোমনি । ৪৬।
ধুপ,
দ্বীপ, আরতি আর ভোগ নিবেদন,
যত
কিছু দেখিয়াছে করে অনুকরন । ৪৭।
মহাপ্রসাদ
বিতরন কৈলা সবাকারে,
অষ্ট
দিবস করিলেন মহাআরম্বড়ে ।৪৮।
আচার্যগুণ প্রকাশ
সবারে নিযুক্ত করি সেবার প্রকাশ,
আচার্যগুণ প্রকাশিয়া ভবিষ্য-আভাস ।৪৯।
প্রভুপাদের বাল্যকালে ঐছে নানা রঙ্গ,
দুঃসাহস করি কিছু কহিলাম প্রসঙ্গ । ৫০।
অপূর্ব অনবদ্ধ কাব্যানুবাদের প্রশংসার ভাষা নাই
ReplyDeleteআপনার চরণে দণ্ডবৎ প্রণতি জানাই।।
This comment has been removed by the author.
ReplyDeleteha ha ha
ReplyDeleteHarekrishna, pranam prabhu
ReplyDeleteApnar shilpa sailing er tulona nei
Iti apnar kripa parti
Prem sarovar devi dasi
হরেকৃষ্ণ প্রভু দণ্ডবৎ প্রণাম, অত্যন্ত গভীরভাবে আপনি শ্রীল প্রভুপাদকে নিয়ে ভেবেছেন তই এত সুন্দর লিখনিটি আমার পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে জগৎগুরু শ্রীল প্রভুপাদকে আমাদের মাঝে এত সুন্দর ভাবে তুলে ধরার জন্য।
ReplyDelete